Hello Blurt বন্ধুরা আশা করি সকলে ভালো আছেন। আমিও ভাল আছি। আজকের পোস্টটি হলো করম জলে নামক একটি পার্কে আমি এবং আমার ছোট ভাইরা গিয়েছিলাম সেখানকার কিছু দৃশ্য আপনাদের মাঝে শেয়ার করুন।
সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনভূমি, যা বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বিস্তৃত। এটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত এবং প্রকৃতির এক অপূর্ব নিদর্শন। সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য, জীববৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ একে পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বনভূমি হিসেবে গড়ে তুলেছে।
সুন্দরবনের ভৌগোলিক অবস্থান
সুন্দরবন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এটি খুলনা, সাতক্ষীরা এবং বাগেরহাট জেলা জুড়ে বিস্তৃত। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ অংশেও সুন্দরবনের অংশ রয়েছে। মোট বনভূমির প্রায় ৬০% বাংলাদেশে এবং বাকি ৪০% ভারতের অংশে অবস্থিত।
সুন্দরবনের আয়তন
সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ১০,০০০ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশের অংশ প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার এবং ভারতের অংশ প্রায় ৪,২৬৩ বর্গকিলোমিটার।
উৎপত্তি ও নামকরণ
সুন্দরবনের নামকরণ করা হয়েছে "সুন্দরি" নামক এক প্রকার ম্যানগ্রোভ গাছের নামে। এই গাছ সুন্দরবনের অন্যতম প্রধান উদ্ভিদ। ধারণা করা হয়, "সুন্দর" শব্দ থেকে সুন্দরবনের নামকরণ হয়েছে কারণ এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
সুন্দরবন তার নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে অসংখ্য নদী, খাল, এবং খাঁড়ি। জোয়ার-ভাটার প্রভাবে এই বনপ্রান্তর প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়। নদীর ধারে নারকেল ও কেওড়া গাছের সারি এই বনভূমিকে আরও মনোরম করে তুলেছে।
জীববৈচিত্র্য
সুন্দরবন জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ একটি বনভূমি। এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ।
প্রাণীজগৎ:
রয়েল বেঙ্গল টাইগার
চিত্রা হরিণ
কুমির
লোনা পানির কচ্ছপ
বন বিড়াল
শুশুক
পাখিজগৎ:
মাছরাঙা
বক
কাঠঠোকরা
চিল
পানকৌড়ি
দ্ভিদজগৎ:
সুন্দরী গাছ
গেওয়া
গরান
কেওড়া
গোলপাতা
রয়েল বেঙ্গল টাইগার
সুন্দরবনের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এটি বিশ্বের অন্যতম বিপন্ন প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে সুন্দরবনে প্রায় ১১৪টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে।
সুন্দরবনের নদ-নদী
সুন্দরবনের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় নদী।
পশুর নদী
রূপসা নদী
শিবসা নদী
ভোলা নদী
বলেশ্বর নদী
সুন্দরবনের পরিবেশগত গুরুত্ব
সুন্দরবন বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। এটি ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার সময় ঢাল হিসেবে কাজ করে। এছাড়া সুন্দরবন অক্সিজেন উৎপাদন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য
১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে। এটি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইকোসিস্টেম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব
সুন্দরবন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মধু সংগ্রহ
কাঠ সংগ্রহ
মাছ ধরা
পর্যটন
সুন্দরবনের বিপদ ও সংকট
সুন্দরবন নানা ধরনের বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
বনভূমি ধ্বংস
জলবায়ু পরিবর্তন
চোরাশিকার
নদী দূষণ
সুন্দরবন সংরক্ষণে উদ্যোগ
সুন্দরবন সংরক্ষণের জন্য সরকার ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
বন সংরক্ষণ আইন
রয়েল বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণ প্রকল্প
ম্যানগ্রোভ পুনরুদ্ধার কর্মসূচি
পর্যটন ও ভ্রমণ
সুন্দরবন ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান।
করমজল
হারবাড়িয়া
দুবলার চর
হরণ পয়েন্ট
উপসংহার
সুন্দরবন প্রকৃতির এক অনন্য সৃষ্টি। এটি কেবলমাত্র জীববৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুন্দরবনের সংরক্ষণ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি অপরিহার্য দায়িত্ব।
আমার এই লেখাটি পড়ার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ
আবারো নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব